নিজস্ব প্রতিবেদক:-
জেলার চলনবিল বিলে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনে বোরো ধানের আগাম চারা রোপণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে আজ থেকে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
সিংড়া উপজেলার বালুভরা এলাকায় ১৫০ জন কৃষকের ১৫০ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে সমলয় চাষাবাদ স্কীম। এজন্যে কৃষকদের চারা উৎপাদনে চার হাজার ৫০০টি ট্রে, ৩০০ কেজি হাইব্রীড বীজ, সাড়ে চার টন ইউরিয়া, তিন টন ডিএপি এবং আড়াই টন এমওপি সার বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে চারা রোপণ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে এবং কম্বাইন্ড হারভেস্টরে ধান কাটার সুবিধা প্রদান করবে কৃষি বিভাগ। উদ্দেশ্য কৃষকদের সংগঠিত করে নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে কৃষকদের মেলবন্ধন তৈরি করা।
ট্রে তে পলিথিন মোড়ানো হাউজে পরম যতেœ তৈরি করা বীজতলা মাত্র ২২ দিনে চারা রোপণের উপযোগী হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ চারাগুলো রোপণ করা হচ্ছে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে। রোপণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে লাইন লোগো পদ্ধতি-যাতে করে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসে বেড়ে ওঠে ধানের চারা, সুবিধা হয় পরিচর্যার। পরবর্তীতে পোকা মাকড়ের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহার করা হবে পার্চিং, খরচ কমাতে ব্যবহার করা হবে আধুনিক সেচের এডাব্লুডি (পর্যায়ক্রমিক শুষ্ক ও ভেজা) পদ্ধতি, সার ব্যবহার যথাযথ ও সীমিত করতে ব্যবহার করা হবে সুষম সার, অনায়াসে আগাছা নিধনে থাকবে উইডার মেশিন আর সর্বোপরি যুগপৎভাবে ধান কর্তন, মাড়াই এবং প্যাকিং কাজে ব্যবহার করা হবে কম্বাইন্ড হারভেস্টার।
সুবিধাভোগী কৃষক শহীদুল ইসলাম বলেন, আমরা বীজতলা থেকে মাত্র ২২ দিনে চারা রোপণ করতে পারছি। সতেজ চারাগুলো মেশিনে রোপণের ফলে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই বলে খুব সহজেই জমিতে মানিয়ে যাবে। জীবনচক্রের বেশী সময় জমিতে থাকায় পূর্ণ পুষ্টি পেয়ে ধানের কুশির সংখ্যা বাড়বে, ধানের পরিমাণ হবে বেশী।
অপর কৃষক রাজু আহমেদ জানান, প্রতিবছর এলাকাতে বন্যা দেখা দেয়। ফলে ধান ডুবে যাওয়ার আশঙ্কাসহ ঐ সময় ধান কাটা শ্রমিকের অভাব এবং উচ্চ মূল্য প্রদান সমস্যার মুখোমুখী হতে হয় আমাদের। যান্ত্রিকীকরণের ফলে ঐসব সমস্যা থেকে আমরা রক্ষা পাবো বলে আশা করছি।
কৃষক সিরাজুল ইসলাম স্বপন বলেন, বন্যা প্রবণ হালতি বিলে আধুনিক এইসব যন্ত্রপাতি আর প্রযুক্তি পর্যবেক্ষণ আর অনুসরণ করে এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও উপকৃত হবেন।
সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, সকল প্রযুক্তির সমাহারে গড়ে তোলা এ স্কীমকে সফল এবং মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে কৃষি বিভাগ সব রকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ বাসস’কে বলেন, সমবায়ের মডেল অনুসরণ করে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং সকল প্রযুক্তির সাথে কৃষকের মেলবন্ধন তৈরিীত কাজ করছে কৃষি বিভাগ। আশাকরি এ স্কীম সফলতা লাভ করবে। ভবিষ্যতে জেলার অন্যান্য উপজেলাতে এ কর্মসূচি ছড়িয়ে পড়বে।