1. admin@dailypratidinerbarta.com : admin :
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি পরিদর্শন রাজউক প্লান আর অনুমোদনহীন ভবনে ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে নাসিক ৩ নং ওয়ার্ড সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, চাঁদাবাজ, দখলদারের বিরুদ্ধে ডেমরা থানা শ্রমিক দলের বিক্ষোভ মিছিল। একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি ব্যাগিং পদ্ধতিতে আদা চাষে স্বপ্ন বুনছে রানীশংকৈল উপজেলার আদা চাষিরা পীরগাছায় সাংবাদিকদের সাথে জামায়াতে ইসলামীর মতবিনিময়  মুন্সীগঞ্জে আজ থেকে যৌথ অভিযান অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে শুরু সেনাবাহিনী মুন্সীগঞ্জের কৃতি সন্তান ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হলেন আওলাদ হোসেন পনির মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমি দখল করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ শেখ হাসিনার নামে যত মামলা

মেগা প্রকল্পের জন্য জি-২০ নেতাদের সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ১০৫ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট:-
বাংলাদেশে জনসাধারণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য নেওয়া মেগা প্রকল্পে জি-২০ নেতাদের সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজস্ব অর্থায়নের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘জনগণের জীবনযাত্রার মান বাড়ানোর জন্য আমরা আরও কয়েকটি মেগা প্রকল্প হাতে নিচ্ছি। এসব প্রকল্পের জন্য আমাদের উন্নত বিশ্বের কাছ থেকে ব্যাপক আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন। এই বিষয়ে জি-২০ সহায়ক হবে বলে আমি আশা করি।’

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘ভয়েস অব দ্য সাউথ সামিট-২০২৩’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। টেকসই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং ‘বৈশ্বিক দক্ষিণের’ (গ্লোবাল সাউথ) উন্নয়নের জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

জি-২০ জোটের সামনে ছয়টি প্রস্তাবও রেখেছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনীতিকে (রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ মহামারির প্রেক্ষাপট) বিবেচনায় নিয়ে একটি ন্যায্য ও গ্রহণযোগ্য অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করার এখনই উপযুক্ত সময়।’

গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশকে অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোয় ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এই সম্মেলন বিশ্বজুড়ে তাদের সমকক্ষদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার এক অনন্য সুযোগ করে দেবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ গ্লোবাল সাউথের একটি দেশ এবং ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’ ধারণার আওতায় অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য জি-২০-এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গিকে স্বাগত জানায়। ‘আসুন আমরা একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ এবং একটি উন্নত বিশ্বের জন্য একসঙ্গে কাজ করি’, যোগ করেন তিনি।

টেকসই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য তার প্রথম প্রস্তাবে তিনি বলেন, মানবতার বৃহত্তর স্বার্থে বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, একটি নতুন দৃষ্টান্ত প্রয়োজন যা এসডিজি’র সমান্তরালে সামগ্রিকভাবে বৈষম্যকে মোকাবিলা করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃতীয়ত, স্বল্পোন্নত দেশ, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোসহ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য বিশেষ অর্থায়নের প্রয়োজন। তাদের উত্তরণের সময় এটি পূরণ করতে হবে। চতুর্থ প্রস্তাবে, তিনি নারীসহ সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে ‘ডিজিটাল ডিভাইডস’ সেতুবন্ধন রচনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিনিয়োগ করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা নেওয়ার জন্য অর্থায়ন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর সমর্থন অত্যাবশ্যক, তিনি যোগ করেন।

পঞ্চমত, তিনি বলেন, সব মানুষেরই ভালোভাবে জীবনযাপনের সমান অধিকার থাকা উচিত। তিনি বলেন বৈশ্বিক সম্প্রদায় দুর্ভাগ্যজনকভাবে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে যেন ভুলবেন না।

ষষ্ঠ প্রস্তাবে তিনি বলেন, বৈশ্বিক মানব উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সাউথ-সাউথ ও ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করুন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে অংশীদার, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি খাত, থিংক-ট্যাংক এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রায় পাঁচ দশক আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ন্যায়সঙ্গত আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী জি-২০ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ভারত সরকারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের বিষয়ে পরামর্শমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে জি-২০ প্ল্যাটফর্মকে আরও অর্থবহ করার জন্য তার দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে আমি গভীরভাবে উপলব্ধি করি।’ তিনি ‘ভয়েস অব দ্য সাউথ সামিট’ আহ্বান করার এবং ‘মানবকেন্দ্রিক উন্নয়ন’ বিষয়ক উদ্বোধনী অধিবেশনে তাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও অভিনন্দন জানান।

শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নের স্তম্ভ হিসেবে মানব উন্নয়নের প্রকৃত মূল্যে বিশ্বাস করে এবং এটা সরকারের নীতিতে প্রতিফলিত হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সহযোগিতায় মানবকেন্দ্রিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার জন্য আপনার (মোদির) জোরালো উদ্যোগে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক কোভিড-১৯ মহামারি এবং নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। বিশ্বব্যাপী মন্দা এবং খাদ্য, জ্বালানি ও সারের সংকট জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে যুক্ত করে মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য বৈশ্বিক পর্যায়ে সাহসী, দৃঢ় এবং সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণপরিষদে যে ভাষণ দেন তা উদ্ধৃত করে, তিনি বলেন, মানুষের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য, মানসম্মত জীবনযাপনের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক দায়িত্ব রয়েছে। এই দৃষ্টিভঙ্গি আজও প্রাসঙ্গিক। এই চেতনাকে সামনে রেখে, আমরা মানুষের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশ সবার জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হিসেবে স্বীকৃত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইএমএফের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে বাংলাদেশ জিডিপির দিক থেকে বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে গত ১৪ বছরে দারিদ্র্যের হার ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে, যেখানে মাত্র এক দশকে মাথাপিছু আয় তিনগুণ হয়েছে। বাংলাদেশ এলডিসি স্তর থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য সব শর্ত পূরণ করেছে। এটি সন্তোষজনক যে বাংলাদেশ বিশ্বের পঞ্চম সেরা কোভিড প্রতিরোধী দেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার সেরা পারফরমার হিসেবে স্থান পেয়েছে।

আর্থিক এবং অন্যান্য প্রণোদনার জন্য ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি মূল্যের ২৮টি প্যাকেজ সরাসরি ৭ কোটি ৩ লাখ লোক এবং ২ লাখ ১৩ হাজার সংস্থার কাছে পৌঁছেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একটি শক্তিশালী অর্থনীতির ভিত্তি হিসেবে উন্নত ভৌত অবকাঠামো দিয়ে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার আকাঙ্ক্ষা রাখি।

তিনি বলেন, গত বছর তারা স্ব-অর্থায়নে পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধন করেছেন, যা জিডিপি বাড়াবে। কয়েক দিন আগে রাজধানী ঢাকায় প্রথম মেট্রোরেল সার্ভিস চালু হয়েছে। খুব শিগগিরই আমরা চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের কাজ শেষ করবো, যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম।

ইতোমধ্যে, বাংলাদেশ আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ৩৫ লাখ মানুষকে বিনা খরচে ঘর এবং জীবিকার উপায় করে দিয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। জনগণের জীবনযাত্রার মান বাড়ানোর জন্য আমরা আরও কয়েকটি মেগা প্রকল্প হাতে নিচ্ছি। এসব প্রকল্পের জন্য আমাদের উন্নত বিশ্বের কাছ থেকে ব্যাপক আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন। এই বিষয়ে জি-২০ সহায়ক হবে বলে আমি আশা করি।

তিনি বলেন, আমাদের আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক দেশে রূপান্তরিত করা এবং ২১০০ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ ও জলবায়ু সহনশীল ব-দ্বীপ গড়ে তোলা।

‘আমরা টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য এবং সবার জন্য সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে এই লক্ষ্যগুলো অর্জন করার প্রত্যাশা করি’, যোগ করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ © দৈনিক প্রতিদিনের বার্তা ©
Theme Customized By Shakil IT Park