খুলনা প্রতিনিধি:-
হাড় কাঁপানো শীতের মাস পৌষ বিদায় নিয়েছে শনিবার (১৪ জানুয়ারি)। আজ রবিবার (১৫ জানুয়ারি) শুরু হয়েছে আচার-অনুষ্ঠান আর সৃষ্টির মাস মাঘ। কথায় আছে, মাঘের শীত বাঘের গায়ে। পৌষ আর মাঘ শীতের মাস। এই দুই মাসের শেষেই আম গাছে মুকুল আসে। কিন্তু এবার খানিকটা আগেই পৌষের মাঝামাঝি আর মাঘের শুরুতে খুলনার অনেক আম গাছে আসতে শুরু করেছে মুকুল। আগাম এই মুকুলে আম চাষিদের মনে আশার প্রদীপ জ্বলে উঠেছে।
তবে আগাম মুকুল দেখে আম চাষিরা অনেকে খুশি। কৃষি বিভাগের মতে, শীত বিদায় নেওয়ার আগেই আমের মুকুল আসা ভালো নয়। কারণ এখন ঘন কুয়াশা পড়লে গাছে আগেভাগে আসা মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যা ফলনেও প্রভাব ফেলবে।
তবে লাভ-ক্ষতি পরে হলেও গাছে গাছে মৌমাছির গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে। মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ যেন জাদুর মতো কাছে টানছে মৌমাছিদের। গাছের প্রতিটি শাখা-প্রশাখায় তাই চলছে ভ্রমরের সুর ব্যঞ্জনা। শীতে স্নিগ্ধতার মধ্যেই শোভা ছড়াচ্ছে মুকুল। বছর ঘুরে আবারও তাই ব্যাকুল হয়ে উঠেছে আমপ্রেমীদের মন। মানুষের কাছে ঋতু বৈচিত্র্যে এবারের শীত বিদায়ী মাঘ মাস ধরা দিয়েছে এভাবেই।
নগরজীবনে চলার পথে ঘুরে ফিরে আম গাছের মগডালেই পড়ছে পথচারীর চোখ। তবে মহানগরের পথে-প্রান্তরে চোখ মেলে সদ্য মুকুল ফোটার এমন নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখা গেলেও ভিন্ন চিত্র গ্রামে। গ্রামের আম বাগানগুলোয় এখনও মুকুল আসেনি। সেখানে চলছে কেবলই গাছের পরিচর্যা।
মহানগরীর শিরোমণি এলাকার বাসিন্দা আলী আজম বলেন, এ এলাকার একটি গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। পাশে আরও আম গাছ থাকলেও সেগুলো মুকুল আসেনি।
শিরোমণি বাজারে আসা রহমত হোসেন বলেন, শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। প্রকৃতিতেও এসেছে ভিন্নতা। এরই মাঝে আগেভাগেই মধ্য জানুয়ারিতেই কিছু গাছে মুকুল এসেছে। সাধারণত মাঘের শেষে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে আমের মুকুল আসে। এবার প্রায় এক মাস আগে এসেছে মুকুল।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ পরিচালক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, কিছু আম গাছে আগাম মুকুল এসেছে। শীতে আমের মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। মূল ক্ষতি করে কুয়াশা। এ কারণে মুকুল রক্ষায় চাষিদের গাছ পরিচর্যায় গুরুত্ব ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কুয়াশার কারণে এক ধরনের ফাঙ্গাস সৃষ্টি হয়। তাতে মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই নিয়মিত স্প্রে করতে বলা হয়েছে।
Leave a Reply