ডেস্ক রিপোর্ট:-
নেপালে পোখারায় রবিবার (১৫ জানুয়ারি) ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমান দুর্ঘটনায় ৭২ আরোহীর মধ্যে কেউই বেঁচে নেই। কয়েক টুকরো হয়ে যাওয়া প্লেনটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা নিহত দুই পাইলটের মধ্যে একজন অঞ্জু খাতিওয়াদা। ২০০৬ সালে একইভাবে প্রাণ হারান তার স্বামী কো পাইলট দীপক পোখারেলও। ঘটনাচক্রে সেটিও ছিল এই ইয়েতি এয়ারলাইন্সেরই একটি বিমান।
রবিবার সকালে কাঠমান্ডু থেকে পর্যটন শহর পোখারার উদ্দেশে উড়াল দেয় ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ‘৯ এন-এএনসি এটিআর–৭২’ মডেলের উড়োজাহাজ। ক্যাপ্টেন কামাল কেসির সঙ্গে ছিলেন কো পাইলট অঞ্জু। সকালে উড়োজাহাজটি পোখারা বিমানবন্দরে অবতরণের সময় সেতি নদীর তীরে বিধ্বস্ত হয়।
স্বামীর মতোই একইভাবে প্রাণ গেলো কো-পাইলট অঞ্জুর। শুধু তাই নয়, স্বপ্নপূরণের মাত্র কয়েক সেকেন্ড আগেই থেমে যায় অঞ্জুর স্বপ্নযাত্রা। কারণ এই যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটি সফলভাবে অবতরণ করাতে পারলেই কো পাইলট থেকে ক্যাপটেন উন্নীত হতেন অঞ্জু। যা ছিল তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। কিন্তু কে জানতে এই যাত্রায় শেষ যাত্রা। স্বামী দীপকের মতোই একইভাবে প্রাণ হারাতে হবে তাকেও।
২০০৬ সালের ১২ জুন ইয়েতি এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় স্বামীকে হারিয়েছিলেন অঞ্জু। কো পাইলট দীপকসহ পোখারেল জুমলা বিমানবন্দরে আরও ৯ জন নিহত হন।
তখনই অঞ্জু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন পাইলট হয়ে তার স্বীমার স্বপ্নটা পূরণ করবেন। স্বামীকে হারানোর চার বছর পর পাইলটের ওপর প্রশিক্ষণ শেষ যুক্তরাষ্ট্র থেকে নেপালে ফিরে আসেন তিনি।
ফিরেই (এটিআর) মডেলের উড়োজাহাজ চালানোর মধ্য দিয়ে পেশাজীবন শুরু করেন অঞ্জু খাতিওয়াদা। যা দেশটির সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ বিমান। ওই এটিআর মডেলের একটি উড়োজাহাজে বিধ্বস্তে নিহত হলেন।
অঞ্জুর স্বামী দীপক প্রথমে সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার চালাতেন। পরবর্তীতে ইয়েতি এয়ারলাইন্সে পাইলট হিসেবে যোগ দেন। স্বামীকে হারানোর ১৬ বছর পর একই মর্মান্তিক ঘটনার মুখোমুখি হলে তিনি। অঞ্জুর আত্মীয়রা জানান, নিহত অঞ্জু এবং দিপক রেখে গেছেন ২২ বছর বয়সী এক মেয়ে সন্তানকে।
উল্লেখ্য, রবিবারের উড়োজাহাজটিতে ছিলেন নেপালের আরোহী ৫৩। এছাড়া পাঁচ জন ভারতীয়, চার জন রাশিয়ান এবং দুই জন কোরিয়ান। এছাড়াও আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের একজন করে ছিলেন।
Leave a Reply