আবু কাওছার মিঠু:-স্টাফ রিপোর্টারঃ-
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার প্রসাধনীর স্টলে নারীদের ভিড় বাড়ছে। প্রসাধনীর স্টলগুলো ক্রেতাদের সেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক নারী সেলসম্যান নিয়োগ দিয়েছেন। নারী বিক্রয় প্রতিনিধি পেয়ে ক্রেতারা দ্বিধাদ্বন্ধ ভুলে গিয়ে পছন্দের পণ্য ক্রয়ে ক্রেতা বিক্রেতারা একাকার হয়ে যাচ্ছেন। প্রসাধনীর স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলো এখন জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রসাধনী সামগ্রীর মধ্যে আইশ্যাডো, হেয়ার জেল, সানস্ক্রিম, আইলাইনার, মাস্কারা, কাজল, লিপস্টিক, অলিভঅয়েল, শিশুদের ব্যবহার সামগ্রী, ইমিটেশনের চুরি, আংটি, কানের দুল, পায়েল, গলার চেইন, হার, নাকফুল, ব্রেসলাইট, টিকলি, হাতের বালা নারী ক্রেতাদের পছন্দ। এসব স্টল ও প্যাভিলিয়নের নারীদের ভিড় লেগেই থাকে। বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর। বিক্রেতারা খুশি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শুক্রবার ও শনিবারের তুলনায় গতকাল ১৫ জানুয়ারি রবিবার মেলায় ক্রেতা দর্শনার্থীর ভিড় ছিল কম। নারী ক্রেতারা বিভিন্ন স্টলে ঘুরে ঘুরে প্রসাধনীর পণ্য দেখছেন। ক্রয়ও করছেন। দেশি-বিদেশি গুণগত মানসম্মত পণ্য পেয়ে ক্রেতারা কিছু না কিছু কিনছেন। অধিক মুনাফার আশায় একটি অসাধু চক্র নকল প্রসাধনী সামগ্রী মেলায় বিক্রি করছেন বলে অপপ্রচার রয়েছে। সে কারণে নকল প্রসাধনীর অপপ্রচার থাকায় সতর্কতার সাথে ক্রেতারা পণ্য ক্রয় করছেন।
প্রসাধনী সামগ্রীর ব্যবসায়ীরা বলেন, মেলার ওয়াশরুমগুলো থাকে ব্যবহারের অনুপযোগী। আশপাশে ধুলাবালুতে ভরপুর। সেখানে নিয়মিত পানি ছিটানো প্রয়োজন। আবাসিক সংকটতো আছেই। এছাড়া অন্যান্য বিষয়াদী চমৎকার।
প্রসাধনীর রোক্সানি স্টলে বিক্রয় প্রতিনিধি রুমানা ইসলাম বলেন, নকল প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহার করলে এলার্জি ও ক্যানসার ঝুঁকিতে পড়তে হবে। যে কারণে ভালো মানের প্রসাধনী ক্রয়ে নারী ক্রেতারা ঝুঁকছেন। মেলায় বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর।
সেলিম আজম ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক মোঃ নাছির উদ্দিন বলেন, নি¤œমানের ও কম দামের প্রসাধনী সামগ্রী এখন আর কেউ ব্যবহার করে না। প্রসাধনীগুলো মনসম্মত ও চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ি নারীরা ব্যবহার করে থাকেন। তাই কসমেটিকসের ব্যবসা এখন জমজমাট।
প্রীতি এন্টারপ্রাইজের বিক্রয় প্রতিনিধি রোকেয়া আক্তার বলেন, মেলায় তাদের প্রসাধনী সামগ্রী ভালো বিক্রি হচ্ছে।
নূর এন্টারপ্রাইজের বিক্রয় প্রতিনিধি জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, তারা মেলার স্টলের বিক্রির পাশাপাশি অনলাইনেও ক্রেতাদের কাছ থেকে পণ্যের অর্ডার নিচ্ছেন।
গোল্ডেন রোজের বিক্রয় প্রতিনিধি সাবিকুন্নাহার বলেন, মেলায় বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রীর মধ্যে তাদের সাওয়ার জেল, বডিস্প্রে, পারফিউম, শ্যাম্পো, লোশন, আইশ্যাডো, আইলাইনার, মাস্কারা, কাজল, লিপস্টিকের চাহিদা বেশি।
গোল্ড কেয়ারের বিক্রয় প্রতিনিধির সামসুন্নাহার বলেন, চোখের নিচের ফোলাভাব, কালো দাগ উঠাতে আইব্যাগও বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। পুরুষরা মেলা থেকে হেয়ারজেল সহ কেউ কেউ পরচুলাও কিনছেন।
হ্যাভেন হারবালের বিক্রয় প্রতিনিধি মিজানুর রহমান বলেন, মেলায় হারবালের উৎপাদিত প্রসাধনীর চাহিদাও বেশ। বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর।
সাজগোজ স্টলের বিক্রয় প্রতিনিধি সুব্রত হালদার বলেন, ইমিটেশনের চুরি, আংটি, কানের দুল, পায়েল, গলার চেইন হার, নাকফুল, ব্রেসলাইট, টিকলি, হাতের বালা দেদারসে বিক্রি হচ্ছে।
ঢাকার মিরপুর থেকে মেলায় এসেছেন গৃহবধূ জান্নাত আক্তার। তিনি বলেন, মেলা থেকে শাড়ি ও জামার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে প্রয়োজনীয় প্রসাধনী সামগ্রী কিনেছেন। পণ্যের দাম একটু বেশি। তবে গুণগত মান ভালো।
নারায়ণগঞ্জের এএইচবি ইন্টারন্যাশনার স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফেরদৌস আরা খান বলেন, প্রসাধনীর পাশাপাশি ইমিটেশনের অলংকার মানসম্মত পাওয়ায় ক্রয় করেছি। ইমিটেশনের গহনাগুলোর ডিজাইন অসাধারণ। বিক্রি হচ্ছে প্রচুর।
নারায়ণগঞ্জ থেকে স্বপরিবারে মেলায় এসেছেন গৃহবধূ হেলেনা আক্তার। তিনি বলেন, আগামী এক বছরের চাহিদা অনুযায়ী মেয়াদ দেখে প্রসাধনী সামগ্রী ক্রয় করেছেন। গত বছরও তিনি একই ভাবে পণ্য ক্রয় করেছিলেন। গুণগত মান ও দামে হাতের নাগালে থাকায় এসকল পণ্য কিনেছেন বলে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপবি) সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, মেলার প্রাণ হলো ক্রেতা ও দর্শনার্থী। আর স্টল ও প্যাভিলিয়নের প্রাণ হলো ক্রেতা। নারী ক্রেতাদের সবচেয়ে পছন্দের পণ্য হলো প্রসাধনী সামগ্রী। এখানে নিরাপদে ও নিশ্চিন্তে মানসম্মত দেশি-বিদেশি প্রসাধনী ক্রয় করছেন। তা বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর।