বগুড়া প্রতিনিধি:-
ঘুরতে যাওয়ার টাকা সংগ্রহ করতে বাইসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে অন্য কয়েকজন কিশোর। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে পাঁচ কিশোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার পাঁচ জনের মধ্যে তিনজন স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র, একজন হাফেজিয়া মাদরাসায় পড়াশোনা করে ও একজন এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের বড়িয়াহাট বজলুর মোড়ে একটি বাঁশঝাড় থেকে আবু হুরায়রা (৯) নামে ওই স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আশিক ইকবাল জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যার কথা স্বীকার করেছে। সোমবার বিকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্বজনরা জানিয়েছেন, নিহত শিশু আবু হুরায়রা বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কড়িবাড়ি দক্ষিণপাড়ার মঞ্জুরুল ইসলামের ছেলে ও স্থানীয় সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। হুরায়রা প্রতিবেশী ওই কিশোরদের সঙ্গে খেলাধুলা ও চলাফেরা করতো। তারা কোথাও বেড়াতে যাওয়ার খরচ ও মোবাইল ফোন কেনার জন্য হুরায়রার বাইসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। গত রবিবার স্কুলে টিফিন চলাকালে পাঁচ বন্ধু হনুমান দেখানো ও খাওয়ানোর কথা বলে তাকে ডেকে নেয়। বিকাল ৪টার দিকে তারা পরিকল্পনা অনুসারে সাইকেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিলে সকলে মিলে তাকে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
এরপর বড়িয়াহাট বজলুর মোড়ে একটি বাঁশঝাড়ে ফেলে দেয়। এছাড়া তারা সাইকেলটি একটি দোকানে বিক্রি করে দেয়।
ইন্সপেক্টর আশিক ইকবাল জানান, স্কুল ছুটির পরও দীর্ঘসময় বাড়িতে না ফেরায় স্বজনরা হুরায়রাকে খুঁজতে থাকেন। এ ব্যাপারে তার ভাই শিবগঞ্জ থানায় একটি জিডিও করেন। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে স্থানীয় ডাকুমারা হাটে একটি দোকানে হুরায়রার বাইসাইকেল দেখতে পাওয়া যায়।
তখন দোকানী তাদের জানান, এক কিশোর সাইকেলটি বিক্রি করেছে। বিষয়টি জানার পর পুলিশ অভিযানে নামে। স্কুলে টিফিনের সময় যারা হুরায়রাকে ডেকে নিয়েছিল তাদের শনাক্ত করে। তদন্তের এক পর্যায়ে পুলিশ নিশ্চিত হয় পাঁচ বন্ধুর মধ্যে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া কিশোররই বাইসাইকেল বিক্রি করেছে। পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে পাঁচ বন্ধুকে গ্রেফতার করে। সোমবার সকালের দিকে তাদের তথ্যে বাঁশঝাড় থেকে হুরায়রার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আবু হুরায়রার মরদেহ বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত শিশুর বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম গ্রেফতার পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও অজ্ঞাত দুই থেকে তিন জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সোমবার বিকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply