সোহেল কবির:-স্টাফ রিপোর্টারঃ-
আট লেনের কুড়িল-পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের কাজ প্রায় শেষের পথে। উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে কাজ শেষ হওয়ার পর এ সড়কটি আবার ভাঙতে হবে। কারণ ওই পথে শুরু হবে মেট্রোরেলের নদ্দা থেকে রূপগঞ্জের নির্মাণকাজ। এতে কোটি টাকার সড়কটি নষ্ট হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জানা গেছে, কুড়িল থেকে বালু নদী পর্যন্ত ৬ দশমিক ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের কাজ প্রায় শেষ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে রাজউক। এ প্রকল্পের জন্য ২০১৫ সালে ৫ হাজার ২৮৬ কোটি টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের নভেম্বরে এসে প্রকল্পে ভুল ধরা পরে। তখন কাজ প্রায় শেষের পথে। ভুল ধরা পড়ায় প্রকল্প সংশোধন করেন কর্মকর্তারা। রাস্তা ভেঙে আবার নির্মাণ করতে গিয়ে ব্যয় বেড়ে যায় দ্বিগুণ। প্রকল্প ব্যয় দাঁড়ায় ১০ হাজার ৩২৯ কোটি টাকায়।
প্রকল্পের পরিচালক এম এম এহসান জামিল জানিয়েছেন, এক্সপ্রেসওয়েটির কাজ প্রায় ৯৭ ভাগ কাজ শেষ। প্রধানমন্ত্রী সময় দিলে যেকোনো সময় উদ্বোধন করা হবে।
অপরদিকে, মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনাকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ২ ফেব্রুয়ারী মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-১ এর নদ্দা থেকে রূপগঞ্জের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এহসান জামিল বলেন, ওই পথে মেট্রোরেলের উড়াল সড়ক করা ঠিক হবে না, এটা আমরা অনেকবার বলেছি। কারণ বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত একটি বড় অংশে পাতাল রেল হচ্ছে। কিন্তু মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ আমাদের বলেছে, জাইকার সঙ্গে চুক্তি হয়ে গেছে। তাই উড়াল সড়কই করতে হবে। তখন আমরা তাদের বলছি আপনাদের পিলার আগে করে ফেলেন। পিলারগুলো করে ফেললে রাস্তার ক্ষতি হবে না। তারা আমাদের বলছেন, আপনাদের কাজ শেষ হলেও দুই পাশের মাঝ বরাবর একটা করে লেন আমাদের জন্য ছেড়ে দিয়েন।
তিনি আরও বলেন, আমরা লাইন ছেড়ে দিলেও কাজ করতে সমস্যা হবে, রাস্তার ক্ষতি হয়ে যাবে, অনেক জায়গায় সড়ক ভাঙতে হবে। স্টেশন করতে গেলে পূর্বাচলের অনেক প্লট এর ভেতরে চলে যেতে পারে।
রাস্তা কাটার বিষয়ে এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের পরিচালক মো. আবুল কাসেম ভূঁঞা জানান, এক্সপ্রেসওয়েতে মোট সাতটি স্টেশন থাকবে। রাস্তার ক্ষতি হবে। তবে বড় আকারে হবে না। কারণ আমাদের পিলারগুলো রাস্তার মাঝখানে ফাঁকা জায়গায় বসবে। রাস্তার ক্ষতি হলে আমরা রিপেয়ার করে দেবো।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে প্রকল্পের এমন সমন্বয়হীনতা একটি অমার্জনীয় অপরাধ। এতে শুধু সময় ও অর্থের অপচয় হচ্ছে না, উন্নয়ন যন্ত্রণাও বেড়ে যাচ্ছে।