অনলাইন ডেস্ক:-
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতনে প্রতিষ্ঠানটির চার ছাত্র আহত হওয়ার ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের সব শিক্ষকদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভা শেষে অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার একথা জানান।
সাহেনা আক্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সভায় দুটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেদিন কী ঘটেছিল তা উৎঘাটনের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অপরটি ভবিষ্যতে কলেজ ক্যাম্পাস কিংবা ছাত্রাবাসের ভেতর এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে না ঘটে এজন্য করণীয় নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোনও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সুরাহার জন্য নয় সদস্যের অভিযোগ নিষ্পত্তিকরণ কমিটি এ কাজটি করবেন। এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তীতে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা ডেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে প্রধান ছাত্রবাসে শিবির সন্দেহে চার ছাত্রকে ছাত্রলীগের ৭-৮ জন নির্যাতন করে বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলায় আহত জাহিদ হোসেন ওরফে ওয়াকিল (২২) ও সাকিব হোসেন (২২) বর্তমানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। অপর দুই ছাত্র হলেন- এস এ রায়হান (২১) ও মোবাশ্বির হোসেন (২২)। তাদের নির্যাতনের পর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নির্যাতনের শিকার চার ছাত্রই চমেকের ৬২তম ব্যাচের।
নির্যাতনের শিকার ছাত্রদের অভিযোগ, বুধবার রাতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী ওই চার ছাত্রকে ছাত্রাবাসের নিজ নিজ কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যান। পরে তাদের পৃথক একটি কক্ষে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তাদের বাড়িতে চলে যেতে বলা হয়। রায়হান ও মোবাশ্বির বাড়িতে ফিরে যান। জাহিদ ও সাকিব চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। তখন ঘটনা জানাজানি হয়।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী জানান, চার ছাত্রকে কারা নির্যাতন করেছে তা ক্যাম্পাসে সবাই জানে। এরপরও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
চার ছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিজিৎ দাশ নামে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের এক ছাত্রলীগ নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগীরা। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিজিৎ দাশ জানান, ‘চারজনই ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তারা শিবির নিয়ন্ত্রিত রেটিনা কোচিং সেন্টারের শিক্ষক। তারা শিক্ষার্থীদের ব্রেন ওয়াশ করার চেষ্টা করছিলেন। এ কারণে তাদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তাদের ওপর নির্যাতন কিংবা মারধর করা হয়নি।’
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি যতটুকু জানতে পেরেছি শিবির গোপনে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। স্বাধীনতার পক্ষের প্রগতিশীলমনা ছাত্ররা তা মেনে নিতে পারেননি। এ কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কমিটি নেই। কমিটি না থাকার ফলে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।’
Leave a Reply