সুজন চক্রবর্তী, আসাম( ভারত) প্রতিনিধিঃ-
আসামরাজ্যের মঙ্গলদৈয়ের ১নং ওয়ার্ডের মহাত্মা গান্ধী রোডের ভাই ও বোন নীলোৎপল দাস ও বিজিতা সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে মঙ্গলদৈ সদরের জামে মসজিদের নামে জমি দান করেছেন। মঙ্গলদৈ লক্ষীনাথ বেজবরুয়া রোডে থাকা মসজিদে দান করা জমির বতর্মান বাজার মূল্য ১ কোটি টাকার বেশি। লক্ষণীয়, নীলোৎপল দাস একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও বিজাতা গৃহিণী। তারপর ও এক পয়সা ও নেননি। ১৯৩৪ সালে মসজিদের মাটির প্রয়োজন হওয়া মঙ্গল লাল দত্ত মৌখিকভাবে ৯ লেচা জমি দিয়েছিলেন মসজিদ পরিচালন কমিটি। মঙ্গললালের মৃত্যুর পর বীনাপানি সিংহরায়, কল্যাণী দত্ত, কমলা দত্ত দাসের নামে নামজারি হয়। এবং জমির খাজনা দিয়ে আসছিলেন। এই তিন মেয়ের মৃত্যুর পর বীনাপানি সিংহরায় ও কমলা দত্তের ছেলে নীলোৎপল দাসের নামে জমির নামজারি হয়। কল্যাণী দত্ত অবিবাহিত হওয়ায় তার কোনো সৎ সন্তান ছিল না। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, বিজিতা সরকারের স্বামী গৌতম সরকার এখনো খাজনার টাকা পরিশোধ করছেন। তাই বতর্মানে জমির কাজ শিথিল করার জন্য সরকার কর্তৃক চালু করা বসুন্ধরা প্রকল্পের সুবিধা গ্রহন করা এবং মসজিদের নামে জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য মঙ্গলদৈ সদর দফতরে আবেদন করলে প্রকৃত রহস্য বের হয়। বিজিতা সরকার ও নীলোৎপল দাস ওই জমির মালিক বলে মসজিদ পরিচালনা কমিটির অধিকাংশ সদস্য জানতেন না। জানার পর মসজিদ পরিচালনা কমিটি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কোনো বিনিময় না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেই জমি হস্তান্তর করবে বলে জানায় বিজাতারা।তারা আরও বলেন,আমরা জমির বিনিময়ে আমাদের প্রয়াত মা ও কাকার আত্মাকে আঘাত করতে চাই না এবং আমাদের মধ্যে সাত প্রজন্মের ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব সব সময় বজায় থাকুক। তারা রাজস্ব সার্কেলের সার্কল অফিসারের সামনে একটি অনাপত্তিপত্রে স্বাক্ষর করে যেতে বলা হয়, আমরা জমির বিনিময়ে আমাদের প্রয়াত মা ও কাকার আত্মাকে কষ্ট দিতে চাই না। এতে মঙ্গলদৈ সদর জামে মসজিদের নামে ১৬৩৪ সালের ৯ লেচা সরকারিভাবে দাগ দেওয়া জমি হস্তান্তর করা হয়। এভাবে ৮৯ বছর পর মসজিদের জমি হস্তান্তর করা হয়। আর্থিকভাবে খুব ধনী না হলেও বিজিতা ও নীলোৎপল কোনো বিনিময় ছাড়াই কোটি টাকার জমি মসজিদের নামে দান করে দিলেন।