ডেস্ক রিপোর্ট:-
গেল বুধবার পশ্চিম তীরের প্রাচীন শহর নাবলুসে এক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানায়, তাদের লক্ষ্য ছিল একটা ভবনে লুকিয়ে থাকা সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা। এমন তিনজনকে তারা অভিযান চালিয়ে হত্যা করেছে বলেও জানায়।
কিন্তু ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে এই অভিযানে অন্তত ১১ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে নাবলুসের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৮০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি।
এর আগে গত মাসে পার্শ্ববর্তী জেনিন শহরে অনেকটা একই রকম অভিযানে ১০ ফিলিস্তিনি মারা যায়। সেটি ছিল ২০০৫ সালের পর পশ্চিম তীরে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ঘটনা। তবে এবারের অভিযান সেটিকেও ছাড়িয়ে গেল।
১১ ফিলিস্তিনিকে হত্যা, ইসরায়েলে রকেট হামলা যোদ্ধাদের
নাবলুসে যখন ইসরায়েলি সেনারা প্রবেশ করে এদিন সেসময় ব্যাপক বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীদের সাথে তাদের সংঘর্ষ হয়। পাথর ছোড়া হয় তাদের যান লক্ষ্য করে। পুরো অভিযানটি চার ঘণ্টা ধরে চলে এবং সকালের মাঝামাঝি এমন একটা সময় এটা করা হয় যখন এই প্রাচীন শহরের সংকীর্ণ রাস্তাগুলোতে মানুষ তাদের পরিবার নিয়ে কেনাকাটা করছিলেন।
ফিলিস্তিনিদের প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায় তরুণ যুবক যাদের কাছে কোনো অস্ত্র নেই তারা পালাতে গিয়ে গুলির শিকার হন। অনেককে মাটিতে লুটিয়ে পড়তেও দেখা যায়।
নাবলুসের ফ্যাকশনাল কোঅর্ডিনেশন কমিটির কোঅর্ডিনেটর নাসর আবু জাইশ বলেন, ক্রমেই পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ বিদ্বেষমূলক দখল ও চরম ডানপন্থি সরকার নাবলুস এবং পশ্চিম তীর জুড়ে ফিলিস্তিনিদের ওপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
অভিযানে নিহতদের অনেকে বেসামরিক নাগরিক। ১৬ বছরের কিশোর থেকে শুরু করে ৭১ বছরের বৃদ্ধও রয়েছেন নিহতের তালিকায়। তাদের শেষকৃত্যে মানুষের ঢল নামে। হাজারো মানুষ শোক জানান। ফাঁকা গুলি ছুড়ে প্রতিবাদও করেন।
গাজার নিয়ন্ত্রণে থাকা সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে আমাদের ধৈর্য ফুরিয়ে আসছে। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও এই আক্রমণের জন্য ইসরায়েলি সরকারকে দায়ী করে বিবৃতি দিয়েছেন।
নাবলুসে যেভাবে ১০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরায়েল
ইসরায়েলের এমন অভিযানে এই বছর বেসামরিক ও সশস্ত্র গোষ্ঠী মিলিয়ে ৬০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হলো। এছাড়া ইসরায়েলিদের লক্ষ্য করে ফিলিস্তিনিদের হামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জন মারা গেছেন।
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যেভাবে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে তা আসলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার যে চেষ্টা সেটাতে যেন ব্যর্থতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
Leave a Reply