ডেস্ক রিপোর্ট:-
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাতো বঙ্গবন্ধুর কন্যা। টুঙ্গিপাড়া কতো গেছি তা হিসাব করে বলতে পারব না। যতোবারই আমি সেখানে গেছি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে রিসিভ করেছেন। আমিতো এখন আর রাজনীতির ভেতরে নাই। কারণ আমি রাষ্ট্রপতি। কালকে এখানে মিটিং হবে। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী কালকে মিঠামইনে আসতেছেন এবং আমার বাড়িতেও আসবেন। সুতরাং সারাজীবন যেখানে উনার বাড়িতে গেলে আমাকে রিসিভ করেছেন। তাই কালকে উনাকে রিসিভ করতেই আমি বাড়িতে আসছি।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের কামালপুরে নিজ বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী মিঠামইনে এসেছিলেন। তখন হাসপাতালের সামনে হেলিপ্যাডে নেমেছিলেন। কিশোরগঞ্জ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বহন করার জন্য দুইটা রিকশা এনেছিলাম। হেলিপ্যাড থেকে কিছু পথ রিকশা ধাক্কা দিয়ে ও কিছু পথে হেঁটে গেছেন প্রধানমন্ত্রী। বাড়িতে আর নিয়ে আসতে পারিনি। কারণ বাড়ির যে বর্তমান গেইট সেখানে তখন নৌকা ও লঞ্চ ভিড়তো। বাড়িতে আসাটাই সম্ভব ছিল না। যার জন্য উনি এখানে আসেন নাই। হেলিপ্যাডের অন্য কোথাও থাকলে আমার বাড়িতে না এসেও পারতেন। কিন্তু এখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে হেলিপ্যাড আমার বাড়ির কাছেই। সমাবেশও আমার বাড়ির সামনের হেলিপ্যাডে। সুতরাং আমার বাড়ির ওপর দিয়ে যাবেন। স্বাভাবিকভাবেই এটা উনার জন্যও কি ঠিক হবে আমার বাড়িতে আসবেন না। উনি আমার বাড়িতে আসতেছেন এ হিসেবে আমি খুবই খুশি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুও মিঠামইনে আসছিলেন। আমি যখন ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী ছিলাম তখন আমার পক্ষে প্রচারণার জন্য বঙ্গবন্ধু মিঠামইনে এসেছিলেন। তখন বঙ্গবন্ধু মিঠামইন, নিকলী, ইটনা হাওরে ঘুরে গেছেন। তখন এমন পরিবেশ বা সুযোগ ছিল না যে বঙ্গবন্ধু বাড়িতে আসবে। তখন মিঠামইন বাজার থেকে আমি বঙ্গবন্ধুকে আমার বাড়ি দেখিয়েছিলাম। কিন্তু বঙ্গবন্ধু আমার বাড়িতে আসতে পারেন নাই। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও ১৯৯৮ সালে আমার বাড়ি কোথায় এটা দেখছেন। হাসপাতাল থেকেও আমার বাড়িটা দেখা যায়। কিন্তু আসতে পারেন নাই। রাস্তার জন্য, যোগাযোগের জন্য।
বঙ্গবন্ধু আসতে পারেন নাই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আপনার বাড়িতে আসতেছে আপনার কেমন লাগছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপতি বলেন, এখনো তো আসেন নাই। আসলে পরে বলতে পারব। এটা পেন্ডিং থাকুক। এটা পরে বললেই ভালো হবে। তবে আমি ও আমার পরিবারের সবাই খুশি বঙ্গবন্ধুকন্যা আমার বাড়িতে আসছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে কী দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল হামিদ বলেন, আমার ছোট ভাই আবদুল হক নুরু, ছোট বোন আসিয়া আলম ও আমার বড় ছেলে এমপি তৌফিক আছেন তারা কী ব্যবস্থা করছে, আমাকে কী খাওয়াবে এইডাও আমি জানি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কী খাওয়াবে এইডাও আমি কইতারতাম না।
উল্লেখ্য, পাঁচ দিনের সরকারি সফরে সোমবার বিকেলে সাড়ে ৩টায় কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইনের কামালপুরে পৌঁছেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ঢাকা থেকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় তিনি উপজেলা সদরের ঘোড়াউত্রা নদীর তীরের হেলিপ্যাডে নামেন। পরে সেখান থেকে মিঠামইনের কামালপুরে নিজ বাড়িতে যান। সেখানে গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন। রাতে নিজ বাড়িতে রাত্রিযাপন করবেন রাষ্ট্রপতি।
আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দীর্ঘ দুই যোগ পরে প্রধানমন্ত্রী মিঠামইন সফরে আসছেন। ওই দিন সকাল ১০টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাসের উদ্বোধন করবেন তিনি। পরে দুপুরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে তার পৈতৃক বাড়ি মিঠামইন সদরের কামালপুরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে জোহরের নামাজ পড়ে রাষ্ট্রপতির আয়োজনে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীরা। পরে বিকেল ৩টায় মিঠামইন সদরের হেলিপ্যাড মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে মিঠামইন ছেড়ে যাবেন।