অনলাইন ডেস্ক:-
রাজধানীর গুলিস্তানে বিস্ফোরণের আসল কারণ দুয়েক দিন পরে জানা যাবে উল্লেখ করে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, বিস্ফোরকের কোনো গন্ধ পাওয়া যায়নি। এছাড়া ঘটনাস্থলে কোনো স্প্রিন্টার পাওয়া যায়নি। তবে সব বিষয়কে কাজ মাথায় রেখে আমরা কাজ করছি, আমাদের বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে কাজ করছে।
ঘটনাস্থলের পরিদর্শন শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, বিকট শব্দ হয়ে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে। ভবনটি রাস্তার একদম পাশে। এতে অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে। আহতের সংখ্যাটা উল্লেখযোগ্য। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। তবে এই মুহূর্তে হতাহতের সঠিক সংখ্যা বলা সম্ভব নয়। যদিও ভবনটি ধসে পড়েনি, তবে বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে এই মুহূর্তে বিস্ফোরণের সঠিক কারণ বলা যাবে না।
তিনি বলেন, বর্তমানে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন কাজ করছে। এছাড়া ঘটনাস্থলে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। এখানে অনেক দোকান পাট অরক্ষিত অবস্থায় আছে, সেগুলো আমাদের নিরাপত্তা দিতে হচ্ছে। আমরা উৎসুক জনতাসহ সকলকে বলব সড়ে দাঁড়ানোর জন্য। ভিড়ের কারণে আমাদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে এই বিস্ফোরণের কি কারণ মনে করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন প্রাথমিকভাবে আমরা কারণ বলতে পারছি না। খালি চোখে কিছু বুঝা যাচ্ছে না।
বিস্ফোরণের ঘটনায় বেড়েই চলছে লাশের সারি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৫ জনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এসেছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগ সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আহত মানুষদের নিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স ভেতরে প্রবেশ করছে। জরুরি বিভাগের সামনে থেকে শুরু করে বাইরের সড়ক পর্যন্ত আহত এবং নিহতদের স্বজনদের আহাজারি চলছে।
ঢাকা মেডিকেলের ডাক্তার ও নার্স থেকে শুরু করে হাসপাতালের কর্মীরা হতাহতদের সেবা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর হতাহতদের দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আনা আহতদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বিস্ফোরণের ভয়াবহতা এত বেশি ছিল যে মুহূর্তেই স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো এলাকা। দেয়াল ভেঙে এসে পড়ে রাস্তায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পার্শ্ববর্তী ভবনগুলোও। ভেঙে পড়েছে অনেক ভবনের কাঁচ। বাসযাত্রী থেকে শুরু করে পথচারী পর্যন্ত বিস্ফোরণের আশেপাশে থাকা সবাই হতাহত হয়েছেন। ঘটনার পর রিক্সা, ঠেলাগাড়ি, ট্রাক, গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্সসহ যে যেভাবে পারছে আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, ভবনটি বাণিজ্যিক হওয়ায় ভেতরে অনেকের থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে অনেককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ভবনটির ভেতরে আরও আহত কেউ আটকা পড়েছে কি না, তা খুঁজে দেখছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-মিডিয়া) শাহজাহান সিকদার জানান, ফায়ার সার্ভিসের ৭ ইউনিট ভবন থেকে অনেককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে।
ফায়ার সার্ভিসের সদরদপ্তরের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাজাহান শিকদার জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে গুলিস্তান বিআরটিসি কাউন্টারের দক্ষিণ পাশে ৫তলা ভবন (নিচতলায় স্যানিটারি দোকান, বাকি ফ্লোরগুলো ব্র্যাক ব্যাংকের অফিস) এবং তার পাশের ৭ তলা একটি স্যানিটারি মার্কেট ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোনো ভবনই ধসে পড়েনি।
Leave a Reply