মোঃ শামীম আহমেদ,সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ-
স্বামীর সম্পদের ভাগ পেতে অন্যের নবজাতক চুরি করে নিজেদের সন্তান সাজান এক নারী। পরে বিষয়টি তার স্বামীর সন্দেহ হওয়ায় বেড়িয়ে আসে আসল ঘটনা। পরে তথ্য পেয়ে তদন্তে সঠিক প্রমাণ পেয়ে চুরি করে আনা শিশুটিকে আসল বাবা মায়ের হাতে ফিরিয়ে দিলো পুলিশ।
সোমবার (১৫ মে) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি জানান, সাভারের তালবাগ এলাকার বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন (৬৩)'র দ্বিতীয় স্ত্রী হালিমা বেগম। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ায় ২০২১ সালে হালিমাকে বিয়ে করেন দেলোয়ার। বিয়ের তিন মাস হঠাৎ করে হালিমা তার স্বামীকে জানান তিনি সন্তান সম্ভবা। এরপর সন্তান জন্মের পরে নাম রাখা হয় রিয়াদুস সালেহীন ওরফে হামদানকে। সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসেন হালিমা। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ থেকে যায় স্বামী দেলোয়ারের। তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঘেটে বুঝতে পারে
ছেলে হামদান তার ঔরশের সন্তান নয়। এক পর্যায়ে দেলোয়ার তার স্ত্রী হালিমাকে নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন, শিশু রিয়াদুস সালেহীন ওরফে হামদান (০৭ মাস) তাহার গর্ভের সন্তান নয়। সে শিশুটিকে কৌশলে নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর থানা এলাকা থেকে এনেছে। কারণ এই সন্তান দেখিয়ে স্বামী দেলোয়ারের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে ভাগ নেয়ার জন্য অপরের সন্তানকে তার স্বামীর ঔরসজাত সন্তান হিসেবে পরিচয় দেন।
এই ঘটনার পর দেলোয়ার মে মাসের ১২ তারিখ স্ত্রী হালিমকে তালাক দেন। পাশাপাশি বিষয়টি সাভার থানায় জানান। বিষয়টি সরেজমিনে অনুসন্ধান করেন পুলিশ সদস্যরা। পাশাপাশি হালিমার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জানতে পারে যে, শিশুটির আসল পিতা-মাতা বগুড়া জেলার শান্তাহার উপজেলা এলাকার বাসিন্দা। পরে তথ্য প্রযুক্তি ও স্থানীয় লোকজন এবং বগুড়া জেলা পুলিশের সহায়তায় সাভার থানা পুলিশ শিশুটির আসল পিতা-মাতার সন্ধান পায়। শিশুটির আসল পিতা-মাতা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তাহারা হতদরিদ্র, অসচ্ছল ও অসহায় বিধায় শিশুটির নিখোঁজের বিষয়ে কোন খোজ খবর নিতে পারেন নাই। এছাড়াও শিশুটির মা অসুস্থ্য থাকায় কোন প্রকার আইনী পদক্ষেপও গ্রহন করতে পারে নাই। শিশুটির আসল পিতা-মাতাকে নিয়ে সাভার মডেল থানায় এনে আসল বাবা মায়ের হাতে তুলে দেয় পুলিশ।