রাকিব মাহমুদ,রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ
২৪ মে (বুধবার) সন্ধ্যা ৭.০০টায় সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মুনসুর আলী অডিটোরিয়ামে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম। নদী (একটি সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্র) আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপদেষ্টা নবী নেওয়াজ খান বিনু, অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তরুণ সম্প্রদায় গ্রুপ থিয়েটারের পরিচালক জনাব আসাদ উদ্দিন পবলু। প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কাজী নজরুল ইসলাম দুজনেই মানবপ্রেমকে তাদের সাহিত্য প্রয়াসের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন। দুজনের প্রকাশটি যেমন ভাবেই হোক না কেন, তাদের চিন্তার কেন্দ্রবিন্দুটি হচ্ছে মানবপ্রেম। মনুষ্যত্বকে তাঁরা সবার উপরে স্থান দিয়েছেন। অসাম্প্রদায়িকতা, বিশ্বমানবতা, ভাতৃত্ববোধ ও মানবকল্যাণকে আমরা এই দুই কবির লেখায় বারবার উচ্চারিত হতে দেখি। বাংলা সংস্কৃতির বিকাশে রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের অবদান অসীম। এই দুইজন কবির মধ্যে আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্ক ছিল খুব নিবিড়, হার্দিক—একে অন্যের প্রতি নির্ভরতার এবং পারস্পরিক সহযোগিতার।
তারা দু’জনেই ব্রিটিশ শাসনামলে জন্মগ্রহণ করেছেন। ব্রিটিশ শাসিত পরাধীন ভারতবর্ষের নাগরিক ছিলেন তারা। এই পরাধীন ভারতে মানুষের যে পরাধীনতার গ্লানি এবং শৃঙ্খলমুক্তির যে জয়গান তা আমরা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যে এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যে দেখেছি। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এই দুই কবি আমাদের হৃদয়ে ও চেতনায় সমাসীন আছেন এবং বাংলাদেশ সরকার তাদের প্রতি সুবিচার করতে ভুল করেনি। তাঁদের নামে, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় এবং ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের দেশ জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করেছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা ‘ কে এবং রণ সংগীত হিসেবে গ্রহণ করেছে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘চল চল চল’ গানটিকে ।
আজকে ‘নদী ‘এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছে, এটি অত্যন্ত আশার বাণী কিন্তু এই চার দেয়ালের মধ্যে রবীন্দ্র নজরুল জন্মজয়ন্তী যতদিন হবে ততদিন আমরা বাঙালি এবং বাঙালির মুক্তির ক্ষেত্রে রবীন্দ্র নজরুলের যে অসীম প্রভাব এবং অসীম অবদান, সে অবদানকে সার্বিকভাবে গ্রহণ করতে পারবো না। যার ফলে এখন সময় এসেছে রবীন্দ্র-নজরুল কে গণমানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার, মৃত্তিকালগ্ন মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে বিকশিত করার জন্য পৃষ্ঠপোষণা দিয়ে যাচ্ছেন, আমরা যদি এই সুযোগে রবীন্দ্র নজরুলকে গণমানুষের কাছে নিয়ে যেতে না পারি তাহলে সেটি হবে আমাদের শিল্পী-সাহিত্যিক এবং আমরা যারা সাংস্কৃতিক কর্মী তাদের সবথেকে বড় ব্যর্থতা। আমরা কোনদিনও ব্যর্থ হইনি। সাংস্কৃতিক কর্মীরা সকল বিপ্লবে ছিল, সকল বিপ্লবে আছে, এবং যে কোন সংকটে তারা সামনের কাতারে থাকবে।
Leave a Reply