সোহেল কবির, স্টাফ রিপোর্টারঃ-
গাজীপুরের বড়বাড়ী এলাকায় মাদক বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় এক যুবককে তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার ২৯ মে সকালে কুনিয়া বড়বাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার ওই যুবক বর্তমানে তায়রুন্নেসা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
ভুক্তভোগী মোঃ আসাদ (৪১) চর ভয়রা গ্রামের ডামুড্যা থানার, শরিয়তপুর জেলার ইদ্রিছ আলী দেওয়ানের ছেলে। বর্তমান তিনি গাজীপুর গাছা থানার কুনিয়া বড়বাড়ী এলাকার ৩৭নং ওয়ার্ড আহসান উল্লাহ মাষ্টার স্কুলের পশ্চিম পাশে খলিল হুজুর এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আসাদ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলো:
গাজীপুর মহানগরের গাছা থানাধীন কুনিয়া বড়বাড়ী এলাকার মৃতঃ মিজানুর রহমানের ছেলে
বারেক হাজী (৫৫), গাজীপুর মহানগরের গাছা থানাধীন ৩৬নং ওয়ার্ডের মধ্যপাড়া এলাকার
হেলাল উদ্দিনের ছেলে জন্টি ইসলাম রুবেল (২৯), গাজীপুর মহানগরের গাছা থানাধীন ৩৭নং ওয়ার্ডের কুনিয়া বড়বাড়ী চান্দুরা রোড এলাকার
কাশেম মিয়ার ছেলে মিন্টু (৪০)।
নির্যাতনের স্বীকার ভুক্তভোগী আসাদ অভিযোগ সূত্রে জানান, বিবাদীগন এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এবং দীর্ঘদিন যাবৎ তারা এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। একই এলাকায় বসবাস করার সুবাদে উক্ত ১নং বিবাদী বারেক হাজী আমার পূর্ব পরিচিত। বারেক হাজী প্রায় সময় আমাকে মাদক বিক্রিয় করে দিতে বলত। আমি সব সময় তাকে মাদক বিক্রয় করে দিতে অসম্মতি জানাতাম। গত ২৭মে রাত
১২ টায় বিবাদী বারেক হাজী তার ব্যবহৃত মোবাইল থেকে আমাকে ফোন করে জানায় তার মাদকের একটি বড় ধরনের চালান আসছে উক্ত চালান তার সহযোগীদের সাথে মিলে বিক্রয় করে দিতে হবে। কিন্তু আমি বরাবরের মতই তা অস্বীকৃতি জানাই। পরবর্তীতে ২৯মে সকাল অনুমানিক ৬টায় বারেক হাজীর হুকুমে বিবাদী জন্টি মিন্টুসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়িতে প্রবেশ করে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং ২নং বিবাদী জন্টির হুকুমে সকল বিবাদীরা আমাকে বাসা থেকে টেনে বের করে বিবাদী বারেক হাজীর বাড়ীর টিনসিট একটি রুপে নিয়ে আবদ্ধ করে রাখে। পরে বারেক হাজী ও অন্যান্যা বিবাদীরা আমাকে এলোপাথারী ভাবে কিল, ঘুষি মারতে থাকে। ১নং বিবাদী বারেক হাজী তার হাতে থাকা ধারালো লোহার কেচি দিয়ে আমার বাম পায়ের হাটুর নিচে স্বজোরে পাড় মেরে মারাত্মক কাটা রক্তাক্ত জখম করে। ২নং বিবাদীর হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যপুরী ভাবে বাইরাইয়া আমার বাম পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলে মারাত্মক কাটা রক্তাক্ত জখম করে। ৩নং বিবাদীর হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আমার দুই হাতে বাইরাইয়া মারাত্মক বেদনা দায়ক জখম করে। সকল বিবাদীরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যপুরী ভাবে বাইরাইয়া মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা
জখম করে। ১নং বিবাদী আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চাপিয়া ধরিয়া শ্বাসরোধ করিয়া হত্যার চেষ্টা করে। ২নং বিবাদী আমার বুকের উপর ঘুষি মারিয়া মারাত্মক বেদনা দায়ক জখম করে। অতঃপর ১নং বিবাদী আমার নিকট ২,০০,০০০/-টাকা মুক্তিপন দাবী করে বলে তার দাবীকৃত মুক্তিপনের টাকা না দিলে
আমাকে খুন করে আমার লাশ গুম করে ফেলবে। অতঃপর আমি আমার জীবন রক্ষার্থে ঐদিন সকাল অনুমানিক সারে সাতটার সময় আমার স্ত্রী মোসাঃ আসমা বেগম (৩০) কে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে উক্ত ঘটনার বিষয়ে জানাই। অতঃপর আমার স্ত্রী তাৎক্ষনিক তার কর্মস্থল থেকে বাসায় এসে আমার ঘর হতে নগদ ৫০,০০০/-টাকা নিয়ে বিবাদীদের কথা অনুযায়ী তাদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা লোকের নিকট প্রদান করে। অতঃপর আমাকে উক্ত বিবাদীরা কুনিয়া বড়বাড়ী পাকসিন গার্মেন্টস এর পশ্চিম পাশে নিয়ে আসে। ঐ সময় বিবাদীরা আমাকে বলে, আমি যদি এই বিষয়ে আইনের আশ্রয় গ্রহন করি, তাহলে আমাকে পরবর্তীতে সময় সুযোগমত পেলে কোপাইয়া টুকরা টুকরা করে ফেলবে এ বলে তারা দ্রুত চলে যায়। অতঃপর আমার স্ত্রী ও স্থানীয় লোকজনদের
সহায়তায় শহীদ তাজ উদ্দিন আহম্মদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাজীপুর গিয়ে চিকিৎসা গ্রহন করি। প্রাথমিক ভাবে সামান্য সুস্থ্য হয়ে থানায় এসে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করি।
গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইব্রাহিম হোসেন অভিযোগের বিষয়ে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।