স্টাফ রিপোর্টারঃ-
মেঘনা নদীতে মাছ ধরার খেপ দখলকে কেন্দ্র করে জলদস্যুদের গুলিতে ২ জেলে নিহত হয়েছেন। এ সময় জলদস্যুদের গুলিতে গুলিবিদ্ধসহ ৫ জন আহত হয়। এদিকে জলদস্যুদের গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠেছে নোয়াখালী উপকূল।
শুক্রবার বিকালে সুবর্ণচর উপজেলার মঞ্জু চেয়ারম্যান বাজারে জলদস্যু বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে উপকূলের বাসিন্দারা।
এতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম, সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ চৌধুরী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হোসেন টুটুল, সাবেক ইউপি সদস্য হাসান খোকন, যুবলীগ নেতা আমির হোসেন রাজা মিয়াসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধন থেকে এই হত্যাকান্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম।
গত বুধবার সন্ধ্যায় মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দ্বীপ অংশে এলাকা বাসীর দাবী জেলেদের মাছ ধরার ট্রলারে গুলি চালায় জলদস্যু কেফায়েত বাহিনী।
দস্যুদের গুলিতে নিহত আব্দুর রহমান (৪০) নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের নাছির আহমদের ছেলে ও একই গ্রামের রেজাউল হকের ছেলে দেলোয়ার হোসেন রাজু (১৫)
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মানস বিশ্বাসের বরাত দিয়ে ২ জেলে নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত বুধবার রাত ১২টার দিকে সন্দ্বীপ কোস্টগার্ডের সদস্যরা ২ জেলের মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই সময় আহত ২-৩জন জেলেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। নিহত ২ জেলের মরদেহ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ জেলেরা হলেন, জিল্লুর রহমান (৩২) ও নুর আলম মিয়া (৩৫)। এদের মধ্যে জিল্লুর নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের চরমজিদ গ্রামের ভুলু মাঝির ছেলে ও মিয়া একই উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চরতোরাব আলী গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। গুরুতর আহত জেলেরা হলেন, জুয়েল (২৬), আব্দুর রহমান (২২), হোসেন (৪০), ইসমাইল (৪০)।
ভুক্তভোগী জেলে এবং উপকূলের বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, সুবর্ণচর উপজেলার মাইন উদ্দিন মাঝি ও অলি মাঝি মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দীপ অংশ থেকে দীর্ঘ দিন থেকে মাছ শিকার আসছে। কিছু দিন আগে থেকে মেঘনা নদীর মাছ শিকারের এই খেপ দখলের চেষ্টা চালায় কেফায়েত বাহিনী। বুধবার সন্ধ্যার দিকে কেফায়েত বাহিনী ওই খেপ দখল করতে জেলেদের জাল কেটে দেয়। খবর পেয়ে দুটি মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে সেখানে যায় ভুক্তভোগী জেলেরা। একপর্যায়ে জলদস্যু কেফায়েত বাহিনীর সদস্য আলতাফ, নুরউদ্দিন ও জুয়েল সন্দীপ কোস্টগার্ড স্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মহিউদ্দিনের সহযোগিতায় জেলেদের দুটি মাছ ধরার ট্রলারে দুই দফায় হামলা চালিয়ে মাছ, জাল, ট্রলারসহ কোটি টাকার মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে জলদস্যু বাহিনী গুলি ছুড়লে ২ জেলে গুলিবিদ্ধসহ ৮জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে ২জনকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই সময় জলদস্যু বাহিনী ৫ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। নিহত ২ জেলেকে কোস্টগার্ড জলদস্যু সাজানোর পায়তারা করে।
অভিযুক্ত কেফায়েত এর সাথে যোগাযোগ করলে
কেফায়েত উল্যাহ মুঠোফোনে জানান, তিনি গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে চট্রগ্রামে বিশেষ কাজে একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছেন। সেখানে হোটেলের রেজিস্টার ও সিসিটিভি ক্যামেরায় তার অবস্থান রেকর্ড রয়েছে। তিনি কোনভাবেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেন,তিনি বলেন কিছু প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট খবর প্রচার করেছে আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।