উজ্জল চৌধুরী,নিজস্ব প্রতিবেদকঃ-
সামারী করতে গিয়ে আটককৃত দারোগা কামরুল পিপিএম পদ পেয়ে গুনে না উর্ধতন মহলকে।
উপরস্থ মহলের সমযোতায় ছাড়া পায় সাব ইন্সপেক্টর কামরুল হাসান।
অতপর বিষয়টি জানাজানি হলে ধামাচাপা দিতে মড়িয়া হয়ে উঠেন ওসি সিদ্ধিরগঞ্জ গোলাম মোস্তফা
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান পিপিএম।
রাষ্ট্রপতি পদক পিপিএম সাধারণত বীরত্বপূর্ণ কাজের জন্য অথবা ভাল কোন কাজের বিনিময়ে (যেটা সবার নজরে বেশি আসে) তাদের সম্মাননা দেওয়া হয়। তিনি সেটা পেয়েছেন। তাই নামের সাথে ব্যাজে লিখেন পিপিএম।
বেপরোয়া সামারী বানিজ্যে অনেক খ্যাতি অর্জন করেছেন, যাহা তিনি গর্বের সাথে বলে বেড়ান।
সামারী ব্যপকার্থে ব্যবহার হলেও পুলিশের ক্ষেত্রে ফিটিংবাজীকেই বুঝায়।
এজন্য সোর্স নিয়স্ত্রণ করেন তিনি। সোর্সের মাধ্যমেই চলে তার ব্যাপক সামারী।
তার অপকর্মের বিষয়টি পুলিশ সদস্যরাও মেনে নিতে পারছেন না অতিষ্ট্য হয়ে উঠেছেন পুর্বের থানার পুলিশ সদস্যরা।
কিন্তু কথায় আছে ‘চোরের দশ দিন, গৃহস্থের একদিন’। আর তেমনটাই ঘটেছে তার কপালে।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) ভোররাত ৪টার দিকে ফতুল্লা থানার তল্লা কায়েমপুরস্থ বটতলা এলাকায় সামারী করার সময় ৩ সোর্সসহ ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন গুণধর সামারীবাজ এই পুলিশ কর্মকর্তা।
আটককৃত তিন সোর্সের নাম হচ্ছে-রিয়াদ, বিজয় ও ইমন।
এসআই কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে. তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় কর্মরত হলেও ফতুল্লা থানা সীমানায় গিয়ে চাঁদাবাজী করেন। শিবু মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় আটক বাণিজ্য করেন।
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের একটি সুত্র জানায়, ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে নিয়মিত টইল ডিউটি করাকালীন সময় মঙ্গলবার ভোর রাত চারটার দিকে কায়েমপুর বটতলা এলাকায় একটি চায়ের দোকানে সন্দেহভাজন তিন যুবককে দেখতে পান। তখন তাদেরকে চায়ের দোকানে অবস্থানের কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা জানায় সকলেই পুলিশের সোর্সের কাজ করে এবং সকলের বাড়ী ফতুল্লা মডেল থানার ভুইগড় এলাকায়। তারা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই কামরুল হাসানের সোর্স হিসেবে কাজ করার কথা জানায়। তখন এস,আই কামরুলকে ফতুল্লা মডেল থানার এস,আই সাইফুল ইসলাম ফোন করে সোর্স এবং অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলে আসামী গ্রেফতার অভিযানে এসেছি। তখন সাইফুল জানতে চায় তিনি ফতুল্লা থানার ওসি কিংবা উধ্বর্তন কর্মকর্তা বা কন্ট্রোল রুমের পারমিশন নিয়েছেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে কামরুল জানায় যে, না সে কোন অনুমতি নেয়নি। এক পর্যায়ে এস,আই কামরুল উত্তেজিত হয়ে ফতুল্লা মডেল থানার এস,আই সাইফুল ইসলামের উপর রেগে যান। তখন এস,আই সাইফুল বিষয়টি ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আজম মিয়াকে জানান। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ফতুল্লা মডেল থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) কাজী মাসুদ রানা। তার আগেই ঘটনাস্থলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এস,আই কামরুল ও এ,এস,আই রেজাউল নিজস্ব ফোর্স নিয়ে পৌছে এস,আই সাইফুলের সাথে অশোভন আচরণ করে।
তখন সাইফুল অনুমতি ছাড়া সাদা পোষাকে ফতুল্লা থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা কে অবৈধ বলে তাদেরকে আটক রাখেন দীর্ঘক্ষণ। এক পর্যায়ে সেখানে ফতুল্লা থানার ইনস্পেক্টর (অপারেশন) কাজী মাসুদ রানা ফতুল্লা মডেল থানার অপর একটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। একই সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে ছুটে আসেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোজাম্মেল হক। তখন এস,আই কামরুলসহ সকলকে ফতুল্লা মডেল থানায় নিয়ে আসতে চাইলে তখন উপর মহলের তদবিরে এসআই কামরুল ও এএসআই রেজাউলকে সেখানে ছেড়ে দিয়ে আসা হয়। তবে ফতুল্লা মডেল থানায় নিয়ে আসা হয় সিএনজি চালকসহ তিন সোর্সকে। তার অপকর্মের পুর্বের একটি বর্ণনা হলো এই যে, মাদক ব্যবসায়ী ডলারকে মাদক না পেয়েও আটক রেখে নগদ ৪ লক্ষ টাকা ও একটি মটরসাইকেল, এমনকি বাড়ির অর্জিনাল দলীল রেখে দেন। অত্র অপরাধের কারণে তাতক্ষণিক রিলিজ করে দেওয়া হয়েছিলো তাকে। এর পরে অনেক ধরণের তদবীর করে আবারও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এসেছে, এবং পুরো জেলায় পিপিএমের জোড়ে সামারী বানিজ্য চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই কামরুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, একটি অভিযানে জালকুড়ি গিয়েছিলাম। কিন্তু আসামির বাড়ি চিনতাম না। আমার সাথে থাকা ৩ সোর্সকে কায়েমপুর বটতলা রেখে আমি গাড়ি নিয়ে অন্য আরেক সোর্সকে আনতে চাষাঢ়ার দিকে যাচ্ছিলাম। এমন সময় ফতুল্লা থানার এসআই আমার ওই ৩ সোর্সকে আটক করে। আমি তাদের ছাড়াতে গিয়েছিলাম। তখন আমার সাথেও খারাপ আচরণ করেন এসআই সাইফুল।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, তেমন কিছু হয়নি।
রুপগঞ্জে আসামি ধরতে যাওয়ার কথা, যে সোর্স আসামির বাড়ি চিনে তাকে আনতে নারায়ণগঞ্জ যায় কামরুল, বাকি সোর্স দের শিবু মার্কেট রেখে যায়, তাদের সাথে ফতুল্লা থানার এস আই সাইফুল ইসলামের সাথে কথা কাটাকাটি হয়।
এর বাহিরে কিছু না,নিজেদের ভিতর মাখামাখি না করাই ভালো বলে ওসি গোলাম মোস্তফা জানান।
ঘটনার বিষয়টি অস্বীকার করলেও অপর একটি সূত্র নিশ্চিত করে যে, দুপুর পৌনে একটায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা মোবাইল ফোনে কল করে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান ফতুল্লা মডেল থানার ওসিকে।
এবং তিনি জানান, জালকুড়িতে ৩ ছিনতাইকারীকে আটক করেছিল। অপর ছিনতাইকারীকে ধরতে চাষাড়া গিয়েছিল।
ঘটনার বিষয়ে জানতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘ক’ সার্কেল) এস এম জহিরুল ইসলাম (বিপিএম) জানান, এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা, আমি এখন ছুটিতে আছি।