আরিফ মিয়া, স্টাফ রিপোর্টারঃ-
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি তফসিল ঘোষণা দেন। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল এমন সময় ঘোষণা করা হলো, যখন রাজপথের প্রধান বিরোধী শক্তি বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো সরকার পতনের আন্দোলন করছে।
নির্দলীয় সরকারের দাবিতে থাকা বিরোধীদলগুলো বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। এরইমধ্যে জোরালো আলোচনা উঠেছে – রাজনৈতিক সমঝোতার। দাবি উঠেছিল সংলাপ আয়োজনের। সবশেষ শর্তহীন সংলাপের উদ্যোগ নেয় যুক্তরাষ্ট্র।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে সংলাপে বসতে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
সংলাপ চেয়ে চিঠি দেওয়ার বিষয়ে গত রবিবার ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস থেকে জানানোর পরদিন ইসি জানিয়ে দেয়, মার্কিন চিঠিতে তফসিল ঘোষণায় কোনো প্রভাব পড়বে না। তফসিল ঘোষণা করার জন্য সিইসির জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণেও উঠে এসেছে রাজনৈতিক সংকটের বিষয়।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ পূর্তির আগের ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন করতে হয়। চলতি সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি।
এর আগের ৯০ দিনের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা আছে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৩ দফা (৩) উপদফা (ক)-এর বরাতে এবং নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করেন সিইসি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল মনে করেন, সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমঝোতা ও সমাধান করা অসাধ্য কিছু নয়। তিনি বলেন, ‘অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য কাঙ্ক্ষিত অনুকূল রাজনৈতিক পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
কিন্তু নির্বাচন প্রশ্নে, বিশেষত নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতির প্রশ্নে, দীর্ঘ সময় ধরে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক নেতৃত্বে মতভেদ দেখা যাচ্ছে। বহুদলীয় রাজনীতিতে মতাদর্শগত বিভাজন থাকতেই পারে। কিন্তু মতভেদ থেকে সংঘাত ও সহিংসতা হলে তা থেকে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিরূপ প্রভাব বিস্তার করতে পারে। মতৈক্য ও সমাধান প্রয়োজন।’
সিইসি বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সব রাজনৈতিক দলকে বিনীতভাবে অনুরোধ করব – সংঘাত ও সহিংসতা পরিহার করে সদয় হয়ে সমাধান অন্বেষণ করতে। জনগণকে অনুরোধ করব – সব উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও অস্বস্তি পরাভূত করে নির্ভয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে এসে অবাধে মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে সব দলের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে সর্বদা স্বাগত জানাবে।
তিনি বলেন, ‘পারষ্পরিক প্রতিহিংসা, অবিশ্বাস ও অনাস্থা পরিহার করে সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতা ও সমাধান অসাধ্য নয়। পরমতসহিষ্ণুতা, পারষ্পরিক আস্থা, সহনশীলতা ও সহমর্মিতা টেকসই ও স্থিতিশীল গণতন্ত্রের জন্য আবশ্যকীয় নিয়ামক।
Leave a Reply