মোক্তার হোসেন,স্টাফ রিপোর্টারঃ-
ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়া তীব্র শীতে কাবু হয়ে পড়েছে সুন্দরবন উপকূলের প্রত্যন্ত অঞ্চলের হতদরিদ্র খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। ঠিক সেই মুহূর্তে শীতার্তদের কথা ভেবে তাদের পাশে দাঁড়ালো এনজিও সংস্থা ব্যুরো বাংলাদেশ। গতকাল হরিহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সকাল থেকে কনকনে শীত উপেক্ষা করে সাত গ্রামের তিন শতাধিক ষাটোর্ধ্ব মানুষ এনজিও সংস্থা ব্যুরো বাংলাদেশের কম্বল নিতে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। শাকবাড়িয়া নদীর দক্ষিণ পাশে সুন্দরবন তখনও কুয়াশার চাদরে মোড়া ছিলো
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামাল হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের হরিহরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অসহায়দের মাঝে এই শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।এসময় উপস্থিত ছিলেন ব্যুরো বাংলাদেশের খুলনা বিভাগীয় ব্যাবস্থাপক আল আমিন খান,উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম,কয়রা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি তারিক লিটু সহ ব্যুরো বাংলাদেশের কর্মকর্তাবৃন্দ।উপজেলার দক্ষিণ ও উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের গাতিরঘের,হলুদবুনিয়া,হরিহরপুর,জোড়সিং,চরামুখা,আংটিহারা,কাটকাটা গ্রামের হতদরিদ্র নিম্ম আয়ের মানুষ কম্বল পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন।
গাতিরঘের গ্রামের মুন্ডা সম্প্রদায়ের ষাটোর্ধ্ব বিদ্যাধারী রাণী বলেন,এতো শীত গেল, কেউ আমাইগো একবারও খোঁজ নিল না। আজ আমাকে বাড়িত থেকে ডেকেএনে একটা কম্বল দিল।শীতে অনেক কষ্ট করতেছিলেম, আজ থেকে একটু হলেও শান্তিতে রাতে ঘুমাতে পারবো।
উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের হলুদবুনিয়া গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব মোহতাব উদ্দিন প্রতিনিধিকে জানান,
এতদিন শীতে কষ্ট পাইছি। এখন আমাগো জন্য ব্যুরো বাংলাদেশ কম্বল দিছে। এ বছর এই প্রথম কম্বল পেলাম। আমাগো আর শীতে কষ্ট পেতে হইবো না।
হলুদবুনিয়া গ্রামের ফতেমা খাতুন ও হরিহরপুর গ্রামের দিপিকা মন্ডল বলেন,চেয়ারম্যান মেম্বাররা আমাদের কম্বল ও অন্যান্য সরকারি সহযোগিতা সহজে দিতে চায় না।এনজিও সংস্থা এসে বিতরণ করায় আমরা কম্বল পেয়েছি।দুই-তিন বছরের মধ্যে আমরা কোন কম্বল পাই না।ঠান্ডায় রাতে ঘুমাতে খুব কষ্ট হয়। এই কম্বলখান পেয়ে এখন শান্তিতে ঘুমাবার পারবো।
ব্যুরো বাংলাদেশের খুলনা বিভাগীর ব্যাবস্থাপক আল আমিন খান বলেন,ঠাণ্ডা বাতাসের দাপটে সুন্দরবন উপকূলের প্রত্যন্ত এই জনপদে শীত জেঁকে ধরেছে সবাইকে। হিম হিম ঠাণ্ডা আর কুয়াশায় নাকাল জনজীবন। শীতের এই তীব্রতা বেশি কাবু করে নিম্ন আয়ের মানুষদের। শীতার্ত অসহায় ও দুস্থ মানুষের উষ্ণতা দিতে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই ব্যুরো বাংলাদেশ পাশে দাঁড়িয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.কামাল হোসেন বলেন,আপনাদের কাছের মানুষ হতে চাই,আপনাদের গায়ের ঘামের গন্ধ নিতে চাই।আপনাদের বিপদ আপাদে পাশে থাকতে চাই।প্রত্যন্ত এই জনপদের মানুষের নিয়ে কাজ করছি।আজকে প্রত্যন্ত এলাকায় এনজিও’র মাধ্যমে কম্বল দিতে পেরে ভাল লাগছে।
Leave a Reply