আশীষ দাশগুপ্ত, লাখাই প্রতিনিধিঃ-
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক ছাড়া এই চলছে লাখাই উপজেলার ১৪ টি স্কুল। এসব বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়েই চালানো হচ্ছে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। তবে বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক না থাকায় পাঠদানে কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে।
লাখাই উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭২টি। প্রধান শিক্ষক নেই ১৪টিতে। অভিভাবকরা বলেন, শিশুদের লেখাপড়া শেখার জন্য প্রথম ধাপ প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু উপজেলার বেশ কিছু বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক না থাকায় কিছু শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতায় অনেক বিদ্যলায় পাঠদানের সুনাম হারাতে বসেছে। যার কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের প্রাইভেট শিক্ষক রাখতে হচ্ছে । এমনকি প্রধান শিক্ষক না থাকায় ওই সব স্কুলগুলোর প্রশাসনিক কার্যক্রম ভেঙে পড়ছে।
অন্যদিকে সুষ্ঠু পরিবেশ ভেঙে পড়ে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কর্মক্রম। শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও তত্ত্বাবধান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, এমন অবস্থায় দ্রুত শূন্য পদে প্রধান ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের প্রতি নিবিড় তত্ত্বাবধান বাড়াতে না পারলে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংকট চরম আকার ধারণ করতে পারে বলে মন্তব্য তাদের।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, যখন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়, তখন শিক্ষক সংকট রেখেই কর্তৃপক্ষ নিয়োগ প্রদান করেন। আবার দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি বন্ধ থাকায় সিনিয়র সহকারী শিক্ষকদের কাঁধেই ভারপ্রাপ্তের ভার পড়ছে।
কিন্তু দায়িত্ব পালনকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা সরকারি তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা পান না। অন্যদিকে অফিসের বিভিন্ন নিদের্শনা অনুযায়ী ভারপ্রাপ্তদের অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হয়। এতে বিদ্যালয়ে পাঠদানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা। এ ব্যাপারে লাখাই উপজেলা শিক্ষা অফিসার মাহমুদুল হক জানান উপজেলায় ৬-৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক নেই সিনিয়র শিক্ষক দিয়ে স্কুল চালানো হচ্ছে, কয়েকটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে হাইকোর্টের রিট করার কারণে শিক্ষকরা বহাল রয়েছে তাদেরকে তো বাদ দেওয়া যায় না, তিনি আরো বলেন শুন্য পদ তৈরি করে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কাকে পাঠিয়েছি। তিনি শিক্ষার বিষয় স্বীকার করে বলেন যে সমস্ত স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই তাতে শিক্ষা ব্যবস্থা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে ।
হবিগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মাওলা বলেন, সরকারিভাবে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়েই চালানো হচ্ছে বিদ্যালয়গুলো। কিছু দিনের মধ্যে সমাধান হবে। তবে তিনি দাবি করেন, জেলা উপজেলা শিক্ষা অফিসের নজরদারি থাকায় প্রধান শিক্ষকবিহীন ওইসব বিদ্যালয়ে পাঠদানের কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে মানসম্মত শিক্ষাদান ও সুষ্ঠু পাঠদানের পরিবেশ ফিবিয়ে আনতে হলে প্রধান শিক্ষকবিহীন এসব বিদ্যালয়ে দ্রুত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। আর তা না হলে দিন দিন প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হবে।
Leave a Reply