স্টাফ রিপোর্টারঃ-
বাঙ্গালী জাতির পরিচয় লাল-সবুজের জাতীয় পতাকার অবমাননা-চিহ্নিত যুদ্ধপরাধী / মানবতাবিরোধীকে সংম্বর্ধনা দেয়ায় লিফট-আর্থিক সুবিধা গ্রহনসহ স্বেচ্ছাচারিতায় অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের বিরুদ্ধে তদন্ত ও দোষীদের বিচার দাবীতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন ময়মনসিংহের কর্মরত শতাধিক সাংবাদিক। সেইসাথে উক্ত স্মারকলিপি অবগত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পৃথক পৃথকভাবে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিব, তথ্য মন্ত্রণালয় সচিব, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপারের কাছে পাঠিয়েছে সাংবাদিকরা।
রবিবার ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ সকাল সাড়ে এগারোটায় ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গনে অবস্থান নেয় মায়মনসিংহে কর্মরত সাংবাদিক, বীরমুক্তিযোদ্ধা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। এসময় বিক্ষোভ-মানববন্ধন পালন করেন তাঁরা। পরে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর হাতে প্র্রধানমন্ত্রীর কাছে দেয়া স্মারকলিপিটি দেয়া হয়।
স্মারকলিপিতে দাবি করা হয় গত ২০২০ সালে ৭ নভেম্বর ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে ডেকে এনে চিহ্নিত যুদ্ধপরাধী/ মানবতা বিরোধী অপরাধী (বর্তমানে কারাবন্দী) মাহবুবুল হক বাবুল চিশতিকে ঢাকঢোল পিটিয়ে সম্বর্ধনা দেয়া হয়। বিনিময়ে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব নিয়েছে একটি লিফট ও মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা। বিভিন্ন সময়ে বিল্ডিং জানালার ফাঁকে গ্রীলে শলা কাঠি দিয়ে, রাতের বেলায় প্রেসক্লাব বিল্ডিংয়ে জাতীয় পতাকা উড্ডীন রেখে ও নিয়ম বর্হিভূত পতাকা ব্যবহার করে জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছে। ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব কতৃপক্ষ মন্দির গুড়িয়ে নির্মিত-সরকারি সম্পত্তি’র যাচ্ছেতাই ব্যবহারে নিজেদের সমাজের উচ্চ মার্গীয় ভাবার আস্ফলনে প্রেসক্লাবের নামে বানিজ্যিক ভবন নির্মাণ করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। যা বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালিত সরকার, সরকারীনীতি বিরোধী, গর্হিত শাস্তিযোগ্য রাষ্ট্রবিরোধী আপরাধ। এনিয়ে বিভিন্ন সময়ে জাতীয়-স্থানীয় সাপ্তিহিক ও দৈনিক পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে আইন শৃঙ্খলা সরকারি বিভিন্ন সংস্থা হতে হুমকি-ধামকি প্রদান এবং সাংবাদিদের নামে আদালেতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় তথ্য প্রমানসহ ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ সুপার ও ডিআইজি মহোদয়দেরকে অবহিত করেও কোনরূপ ফল মিলছে না। উল্লেখিত প্রেসক্লাব সভাপতি ও কতৃপক্ষের এহেন কর্মকান্ডের বিশদ তথ্য প্রমান দেয়া হলেও কোনরূপ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। জাতীয় পতাকার অবমাননাকারী, যুদ্ধপরাধী বাবুল চিশতিকে সম্বর্ধনা দেয়া, বিনিময়ে তার কাছ থেকে লিফট ও আর্থিক সুবিধা নেয়া, মন্দির গুড়িয়ে দখল ও সরকারী সম্পত্তি গ্রাসসহ অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন কোন প্রকার শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহন এমনকি কোন তদন্ত না করেই বিষয়গুলো ধামাচাপা দিয়ে আসছেন।
উল্লেখ্য ময়মনসিংহ জেলায় প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে আসা জেলা প্রশাসকগন আসেন এবং ধ্রুম্রজালে বিষয়টি এড়িয়ে যান। উক্ত প্রেসক্লাব ও সভাপতির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি। কোন প্রতিষ্ঠানের এহেন কর্মকান্ড ও উল্লেখিত রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধের দায় জেলা প্রশাসক এবং প্রশাসন এড়াতে পারেন না। তাই অবিলম্বে বিষয়গুলো তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষী প্রেসক্লাব সভাপতি ও কতৃপক্ষের কঠোর শাস্তির আওতায় আনার জোড় দাবী করা হয়েছে মানববন্ধন থেকে।
সমাবেশে সাংবাদিক নেতা দৈনিক আজকের বসুন্ধরা পত্রিকার চীফ ক্রাইম রিপোর্টার শিবলী সাদিক খানের সভাপতিত্বে ওয়াহিদুজ্জামান আরজু’র সঞ্চলনায় বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক সুবিনয় কুমার গুহ, বদরুল আমিন, খাইরুল আলম রফিক, মো. আরিফ রেওগীর, আজহারুল আলম, উজ্জ্বল খান, মো. মাইন উদ্দিন উজ্জ্বল, তাসলিমা রত্না, আ. হাকিম, নূরুল ইসলাম জিহাদী, হাবিবুর রহমান হাবি, বাপ্পি দাশ, তসলিম সরকার, মো. ফজলুল হক, মারুফ হোসেন, অ্যাডভোকেট রোকসানা আক্তার, নজরুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম ফারুক, নিহার রঞ্জন কুন্ডু, দিপক চন্দ্র দে, আজগর হোসেন রবিন, গোলাম কিবরিয়া পলাশ প্রমুখ।
বক্তারা হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, আগামী দুইদিনের মধ্যে স্মারকলিপি প্রদানের পরও কোনরূপ ব্যবস্থা না হলে সকল সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে জোড়দার আন্দোলনের মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা কারা হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক হাফিজুর রহমান হেলাল, দিলিপ বাবু, তাপস গোয়ালা, রাজন লাল সরকার, সেকান্দার ইমরুল আহসান, সোহানুর রহমান সোহান, উমর ফারুক, মিজানুল ইসলাম, রেজাউল করিম, মমতা বেগম পপি, সুমি আক্তার, আমিনূর ইসলাম রবিসহ ময়মনসিংহ জেলা-উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply