সিরাজুল ইসলাম,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ-
তীব্র শীত কিংবা ঝড়-বৃষ্টি যাই হোক,সয়ে যেতে হয় নীরবে। ছোট্ট একটি ঘর। মরিচা পড়া টিনের জরাজীর্ণ অবস্থা। জীবন সায়ান্নে এসেও প্রতিটি দিন দুশ্চিন্তায় কাটাতে হয় তাকে।
ঘরের চাল প্রায় পুরোটাই ফুটো। নেই খাবারের কিংবা অসুখের চিকিৎসা নিশ্চয়তা। মেলেনি সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা। রয়েছে খাদ্য সংকট। বৃষ্টি হলেই ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিতে হয় পাশ্ববর্তী বাড়িতে। এই ভাঙ্গা ঘড়েই স্বামী ও সন্তান কে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন রানীশংকৈল উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের ফাড়াবাড়ী পকম্বা গ্রামের অসহায় দরিদ্র বাসিন্দা মোছাঃ সকিনা বেগম।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি প্রতিটি ঘরহীন মানুষকে ঘর তৈরি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনে বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় ঘরহীন পরিবারকে ঘর তৈরি করে দেওয়ার কার্যক্রম চললেও যেনো ভাগ্যের চাকা ঘুরছে না দরিদ্র সকিনা বেগমের। সরেজমিনে গিয়ে টানাপড়েনের সংসার যাপনের কথা জানা যায়, ছোট্ট একটি ভাঙ্গা ঘরে তাদের বসবাস।
ঘরের উপরের চালের বেশিরভাগ অংশ ফুটো হয়ে গেছে। যে অংশে কিছুটা ভালো আছে সে অংশে একটি চৌকি বসিয়ে কোন মতে রাত্রি যাপন করেন বৃদ্ধা দম্পতি। কাজ কর্ম কিছু করতে পারেননা বলে মানুষের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে কোনমতে জীবন যাপন করছেন। দরিদ্র সকিনা বেগম বলেন, স্বামী ও প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে জরাজীর্ণ ঘরে যুগ পার করেছি। মেঘ দেখলে বৃষ্টির ভয়! আমাদের সম্পদ বলতে রয়েছে এই ভিটেমাটিও নেই এই জায়গাটিও অন্যজনের আমরা ঘর বানিয়ে থাকছি।
কয়েক বছর ধরে ঘরটি দিয়ে বর্ষার সময়ে পানিতে ভিজতাম। এমনও দিন গেছে রাতে বসে রইছি। এহন শীতে কষ্ট করি। ঘর সংস্কার করব সেই সক্ষমতাও নেই। প্রতিবেশীরা জানালেন, সকিনা বেগম ও তার স্বামী সহ প্রতিবন্ধী সন্তান বর্তমানে চরম ভোগান্তির শিকার। তাদের কোনো ফসলি জমি নেই। কোনো দিন খায় আবার কোনো দিন না খেয়েও থাকে। এখন এই বৃদ্ধ অসহায় সকিনা বেগমের বসতঘরটি মেরামতের জন্য জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানদের সহযোগিতার কোন বিকল্প নাই। সকিনা বেগম বলেন, আমি আমার ইউপি চেয়ারম্যান এর কাছে বারংবার সাহায্যের জন্য গিয়েছি কিন্তু তিনি আমার কোন কথায় কানে তুলেন নি। এমতাবস্থায় আমি কি করব বুঝছি না, আমি নিজেও একজন প্রতিবন্ধী আমার সন্তান ও প্রতিবন্ধী। আমাদের প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়ে চলে কোন রকম সংসার। স্বামীর কাজ করার জো নেই বয়স পেরিয়েছে ৭০। টাকার অভাবে সন্তাকেও পড়াতে পারছি না। থাকার মতো নেই বাসযোগ্য ঘর। এই টিনের ভাঙা ফুটো ঘরে কোনরকম মানবেতর জীবনযাপন করছি। এমতাবস্থায় তিনি কাদতে কাদতে জনপ্রতিনিধি সহ বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন, যাতে করে তার ঘরটি মেরামত করে বাসযোগ্য করা যায়।
Leave a Reply